জীবন যাত্রা

দাম্পত্যে সমস্যা যখন মনের অমিল, কীভাবে মেটাবেন দূরত্ব?

দাম্পত্যে সমস্যা যখন মনের অমিল, কীভাবে মেটাবেন দূরত্ব?

বিয়ে মানে দুটি মনের মিলন। বিবাহিত দম্পতি সুখের দিন কাটাবে এটাই তো স্বাভাবিক হবার কথা। কিন্তু এই স্বাভাবিক বিষয়টিই মাঝে মাঝে অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে, বিবর্ণ ঠেকে বোঝাপড়ার অভাবে, দৃষ্টিভঙ্গির ফারাক এবং আগে থেকে মনের মাঝে গেঁথে থাকা কতগুলো ধারণার জন্য। আপনার মতো আপনার সঙ্গীও একজন পৃথক ব্যক্তিত্ব। তার বেড়ে ওঠা, জীবনবোধ, ভালো লাগা, পারিবারিক প্রেক্ষিত অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপনার কাছ থেকে আলাদা হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর এই সহজ কথাটিই বেশিরভাগ সময় ভুলে যান সবাই। তাই মনের অমিল হলে ভেঙ্গে না পড়ে সামলান কৌশলে।

মনে রাখুন আপনারা আলাদা
সবসময় মনে রাখবেন আপনার স্বামী বা স্ত্রী আপনার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা একজন মানুষ। তার বেড়ে ওঠা, পরিবার, পড়াশোনা, ধ্যানধারণা, অভ্যাস আপনার থেকে আলাদা হতেই পারে। এটা নিয়ে চেঁচামেচি বা মন খারাপ করার কোনো মানেই হয় না। বরং বৈচিত্র্যই তো ভালো। একান্তই কোনো অভ্যাস অপছন্দ হলে ধীরে ধীরে তা পাল্টানোর চেষ্টা করুন। জোরজবরদস্তি না করে হালকা চালে আলোচনা করে দেখতে পারেন।

পরস্পরের বন্ধু হোন
স্বামীর কাছে শুধুমাত্র স্ত্রী হয়ে না থেকে অথবা স্ত্রীর কাছে শুধুমাত্র স্বামী হয়ে না থেকে একজন ভালো ‘বন্ধু’ হয়ে ওঠার চেষ্টা করুন। বিপরীত লিঙ্গের জগত্‍ মানেই আলাদা, এই ধারণা রাখবেন না। একে অপরের গল্প মনযোগ দিয়ে শুনুন, দেখবেন শুনতে শুনতেই অপরিচিত মানুষ, পরিবেশ আপনার কাছে চেনা হয়ে উঠবে। চলে আসবেন একে অন্যের আরো কাছে। পরস্পরের বন্ধুবান্ধব নিয়ে একটা ফ্রেন্ড সার্কেল গড়ে তুলুন।

তৃতীয় ব্যক্তিকে টানবেন না
দাম্পত্যে সমস্যা আসতেই পারে। মতানৈক্য, ঝগড়াঝাঁটিও স্বাভাবিক। তবে তা নিয়ে কটূক্তি, পরিবারের অন্যদের ওপর দোষারোপ করা বা তৃতীয় ব্যক্তিকে টেনে আনা কুরুচির পরিচায়ক। সব সময় চেষ্টা করুন আলোচনার মাধ্যমে একটা সমাধানে আসতে। আপনাদের মনোমালিন্য বাড়ির অন্যান্য সদস্য বা প্রতিবেশীদের কানে না যাওয়াই শ্রেয়। প্রথমেই মাথা গরম না করে ব্যাপারটা বুঝতে চেষ্টা করুন। দেখবেন, প্রত্যেক সমস্যার জন্য একটা না একটা মধ্যপন্থা বের হবেই।

নিজস্ব জগত্‍ তৈরি করুন
নিজের আলাদা একটা জগত্‍ গড়ে তুলুন। আপনার দিনগুলো যদি শুধুমাত্র সঙ্গীকে ঘিরেই আবর্তিত হয়, তাহলে ঠোকাঠুকি লাগার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। স্ত্রী ফুলটাইম চাকরি সম্ভব না হলে পার্ট টাইম কোনো কাজ করতে পারেন। এছাড়া বিশেষ কোনো শখ, যেমন বই পড়া, গানবাজনা, সেলাই ইত্যাদির জন্য সময় রাখুন। ঘর সাজানো, রূপচর্চা করুন, সাম্প্রতিক খবরাখবর রাখুন, দেখবেন ভালো লাগবে। আবার স্বামীকেও খানিকটা স্পেস দেওয়া যাবে। স্বামী নিজের অফিসের পাশাপাশি শখের জায়গাগুলো ধরে রাখুন।

একে অন্যকে সাহায্য করুন
স্বামী সাংসারিক কাজে আপনাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলে খুঁত বের করবেন না বা তা নিয়ে অন্যদের সঙ্গে ঠাট্টাতামাশা করবেন না। বরং যে কাজটা উনি ভালো করেন, সেটার প্রশংসা করুন প্রাণ খুলে। স্ত্রীর যে কাজে আগ্রহ আছে সেই কাজ করতে গেলে তার সাহায্য নিন, এতে আপনারই সুবিধা হবে। অনেকেই রান্না নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে ভালোবাসেন, কেউ আবার ঘর গোছাতে ভালোবাসেন। এসব ব্যাপারে তাকে উত্‍সাহ দিন। পরিস্থিতি অনুযায়ী বুঝে চলুন।

আরও পড়ুন ::

Back to top button