জানা-অজানা

গ্রিক পুরাণের বিস্ময়কর ও বিতর্কিত তিন নারী

গ্রিক পুরাণের বিস্ময়কর ও বিতর্কিত তিন নারী - West Bengal News 24

গ্রিক মিথোলজি এক বিস্ময়কর অধ্যায়। কল্পরাজ্যের অদ্ভুতসব গল্প আমাদের বিমোহিত করে। অসংখ্য চরিত্র আর ঘটনার সম্মিলনে অন্য এক রূপময় পৃথিবীর, অন্য এক মনোরম গন্ধের ভুবনের দিকে আমাদের টেনে নেয় এর জাদুকরী মোহ। গ্রিক পুরাণের তিন বিস্মকর নারী চরিত্র মেদুসা, মৎসকন্যা সাইরেনস আর পেন্ডুরা।

গ্রিক পুরাণের বিস্ময়কর ও বিতর্কিত তিন নারী - West Bengal News 24

মেদুসা:
মেদুসা গ্রিক পুরাণের সবচেয়ে রূপসী এবং সবচেয়ে কুৎসিত ও ভয়ঙ্কর নারী। অনেক অনেক আগে গ্রিসের এ্যাথেন্সে বাস করতো অপরূপ এক রূপসী নারী, নাম মেদুস। তার গায়ের রং ছিলো কাঁচা সোনার মতো আর চোখ ছিলো পূর্ণিমার চাঁদের মতো উজ্জ্বল। সবচেয়ে আকর্ষনীয় ছিল তার চুল। লম্বা, উজ্জ্বল আর মসৃন। রূপে অতুলনীয়া হলেও মেদুসার ছিলো অপরিসীম অহংকার। আর অহংকারই কাল হলো মেদুসার। ফোরসি আর কেটোর মেয়ে মেদুসার আরো ছিলো দুই বোন। স্থেনা ও ইউরায়েল ছিলো অমর কিন্তু মেদুসা অমর ছিলো না। মেদুসা বাস করতো সূর্য থেকে অনেক অনেক উত্তরে। সে কখনো সূর্যকে দেখেনি। একবার তার প্রচণ্ড ইচ্ছা হল সূর্যকে দেখার। তখন দেবী এথেনার কাছে সে অনুমতি চাইলো দক্ষিণে গিয়ে সূর্যকে দেখার জন্য। কিন্তু এথেনা তাকে অনুমতি দেয় নি। এতে প্রচণ্ড ক্ষুদ্ধ হয়ে মেদুসা বলল, এথেনা তাকে সূর্যকে দেখার অনুমতি দেয়নি তার রূপে ঈর্ষান্বিত হয়ে। এই কথায় এথেনা রেগে গেল খুব। এথেনা মেদুসা চুলগুলোকে রূপান্তিত করলো সাপে। আর প্রচন্ড কুৎসিত বানিয়ে ফেলল তাকে এবং অভিশাপ দিল যদি কেউ কখনও মেদুসার চোখের দিকে তাকায় তাহলে সে পাথরে রূপান্তিত হবে।

নিজের রূপ হারিয়ে প্রচন্ড অত্যাচারী হয়ে ওঠে মেদুসা। যেই তার সাথে যুদ্ধ করতে আসতো, মেদুসা তাকে তার চোখের শক্তি দিয়ে পাথর বানিয়ে দিতো। মেদুসা একবার জিউসের স্ত্রী ড্যানীকে বন্দী করে। জিউস তার ছেলে পারসিউসকে পাঠায় তার মাকে উদ্ধার করে আনার জন্য। এ যুদ্ধে পারসিউস কে সাহায্য করে দেবী এথেনা এবং দেবতা হারমেস। তারা পারসিউসকে একটা আয়না আর একটা তলোয়ার দেয় মেদুসাকে পরাস্ত করার জন্য।

অবশেষে পারসিউস সরাসরি মেদুসার দিকে না তাকিয়ে আয়নার মাধ্যমে মেদুসাকে দেখে যুদ্ধ করে এবং একসময় মেদুসার মাথা ধড় থেকে আলাদা করে ফেলে তার শক্তিশালী তলোয়ারের মাধ্যমে এবং উদ্ধার করে নিজের মা ড্যানীকে।

গ্রিক পুরাণের বিস্ময়কর ও বিতর্কিত তিন নারী - West Bengal News 24

সাইরেন:
সাইরেন ছিল একটি রহস্যময় চরিত্র। মৎসকন্যা সাইরেন ছিল গ্রীকপুরাণের মায়াবিনী গায়িকা। সুরের মায়াজাল সৃষ্টি করে জাহাজের যাত্রীদের মৃত্যুর দিকে আকর্ষণ করতো । গানের গলা এতই চমৎকার ছিল যে সেই গান নাবিকদের কানে পৌঁছালে নাবিকরা মোহমুগ্ধ হয়ে সেই দ্বীপের দিকে চলে যেত। আর তখন জাহাজ চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে মৃত্যুবরণ করত সবাই । সাইরেন ছিল নদীদেবতা একিলেপাসের কন্যা । হোমারের ওডিসিতে সাইরেনদের ঊর্দ্ধাংশ মানবী এবং নিম্নাংশ পাখির মত দেখতে বলা হয়েছে । কিন্তু অন্যান্য সূত্রে সাইরেনদের দেহের ঊর্দ্ধাংশ মানবী এবং নিম্নাংশ মাছের মত বলে জানা যায় । সাইরেনিয়া নামক একটি দ্বীপে ছিল সাইরেনদের বাস।

গ্রিক পুরাণের বিস্ময়কর ও বিতর্কিত তিন নারী - West Bengal News 24

প্যান্ডোরা:
প্যান্ডোরা দেবতাদের তৈরি প্রথম নারী। প্যান্ডোরা শব্দের অর্থ- ‘উপহার সামগ্রী’। আগুনের দেবতা প্রমিথিস চুরি করে মানুষকে আগুন দিতে চেয়েছিলো। স্বর্গদেবতা জিউস রাগান্বিত হয়ে পৃথিবীতে পাপ নিক্ষেপের জন্য প্যান্ডোরা সৃষ্টি করলেন। পৃথিবীতে নিক্ষেপিত হওয়ার সময় প্যান্ডোরাকে উপহার দিয়েছিলেন দেব-দেবীরা। যার মধ্যে ছিল-জ্ঞান, সৌন্দর্য, চাতুর্য, স্তাবকতা ইতাদি। সবকিছু একটি বাক্সবন্দি করে দিয়েছিল। নির্দেশ ছিল কখনো কোনোরূপে যেন বাক্সটি খোলা না হয়। কিন্তু প্যান্ডোরার কৌতূহলী মন বাক্সটি খুলে ফেলতে বাধ্য করল। প্যান্ডোরা বাক্স খুলতেই পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল সব পাপ, অসুখ, উপদ্রব, অশান্তি, ব্যথা, হতাশা, লোভ ও হিংসা।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য