জলপাইগুড়িবিচিত্রতা

সহচরীর খোঁজে ফের সাতপাকে বাঁধা পড়লেন চুয়াত্তরের এই বৃদ্ধ

সহচরীর খোঁজে ফের সাতপাকে বাঁধা পড়লেন চুয়াত্তরের এই বৃদ্ধ - West Bengal News 24

স্ত্রী ছেড়ে চলে গিয়েছেন পরলোকে। নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত মেয়েরা। বৃদ্ধ বাবার খোঁজ নিতে ভরসা সামান্য ফোনালাপ। এই পরিস্থিতিতে একাকীত্ব যেন প্রতিদিনই গভীর ক্ষত তৈরি করছিল জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ময়নাগুড়ির হেলাপাকুড়ি এলাকার চারের বাড়ি গ্রামের বাসিন্দা শুদ্রু রায়ের জীবনে। একাকীত্ব কাটাতে তাই চুয়াত্তর বছর বয়সে ফের বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন তিনি। শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিয়ের আনন্দে মাতোয়ারা। তবে বৃদ্ধের মেয়েরা অবশ্য এ বিয়ে মেনে নেননি।

জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির হেলাপাকুড়ি এলাকার চারের বাড়ি গ্রামের বাসিন্দা শুদ্রু রায়। আপনজন বলতে স্ত্রী এবং তিন মেয়ে। দাম্পত্য জীবন ছিল যথেষ্ট সুখের। তবে একদিন আচমকাই সকলকে কাঁদিয়ে চলে যান তাঁর স্ত্রী। তাও প্রায় বছর দশেক আগের কথা। এরপর ধীরে ধীরে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি।

মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার পর একেবারে একা হয়ে গিয়েছিলেন ওই বৃদ্ধ। একাই চাষ করে সামান্য অর্থ উপার্জন করতেন। তার সঙ্গে ঘরকন্নার কাজও সব নিজেই সামলাতেন তিনি। এভাবে বাঁচতে বাঁচতে বড় একা হয়ে গিয়েছিলেন শুদ্রু রায়।

আরও পড়ুন : ২০০ টাকা ঋণ শোধ করতে ৩০ বছর পর ভারতে কেনিয়ার এমপি!

একদিন বাজারে গিয়ে পাশের গ্রামের বাসিন্দা বুধেবালার সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। বিয়াল্লিশ বছর বয়সি ওই মহিলাও বড়ই একা। মাত্র সতেরো বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। বছরখানেক পরই দাম্পত্যে ছেদ। মৃত্যু হয় স্বামীর। তারপর থেকে দিদির বাড়িতেই বাস করেন তিনি। বুধেবালা এবং শুদ্রুর মধ্যে পারস্পরিক ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। দু’জন একা মানুষ যেন আরও কাছাকাছি চলে আসেন।

দু’বছর ধরে এভাবেই কাটছিল দিন। সমাজের প্রত্যেকটা মানুষ বৃদ্ধ বয়সে বিয়ের সিদ্ধান্ত মেনে নেবে তো, এই প্রশ্নই শুধু ঘুরপাক খেত শুদ্রু রায়ের মনে। তবে সম্প্রতি প্রতিবেশী উমেশ রায়কে নিজের মনের কথা খুলে বলেন ওই বৃদ্ধ। তিনিই বিয়ের উদ্যোগ নেন। বুধেবালার বাড়িতেও বিষয়টি জানান। তাঁর পরিবার অবশ্য রাজি হয়ে যায়। তবে বেঁকে বসেন শুদ্রু রায়ের তিন মেয়ে। কিন্তু সন্তানদের আপত্তি অগ্রাহ্য করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন ওই বৃদ্ধ।

এরপর বুধবার সামাজিক রীতি মেনে বিয়ে হয় শুদ্রু এবং বুধেবালার। পুরোহিত ডেকে হিন্দু শাস্ত্র মতে বিয়ে করেন তাঁরা। সমাজের বাঁকা কথাকে পাত্তা না দিয়ে গাঁটছড়া বেঁধে দিব্যি সুখে দিন কাটাচ্ছেন নবদম্পতি।

 

 

সুত্র: সংবাদ প্রতিদিন

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য