জানা-অজানা

যে কারণে ফেসবুকে আপনি হয়ে উঠতে পারেন বিরক্তিকর চরিত্র!

যে কারণে ফেসবুকে আপনি হয়ে উঠতে পারেন বিরক্তিকর চরিত্র! - West Bengal News 24

ফেসবুক হল এমন একটা সোশ্যাল মিডিয়া যেখানে সবাই নিজের জীবনের খুঁটিনাটি ব্যাপারগুলো তুলে ধরতে পারেন এবং সেটা করতে পছন্দও করেন। ফেসবুক বন্ধুদের জীবনের ঘটনাগুলোও জানা যায় নিমিষেই আর সেজন্য কৌতূহলী মানুষের প্রিয় জায়গা হল ফেসবুক। অনেকেই বেশ গোপনীয়তা মেনে নিজের ফেসবুক সাজান আবার অনেকের এত লুকোছাপার বালাই নেই। এটা কিন্তু ভেবে রাখুন যে, ফেসবুক ব্যবহারে অতিরিক্ত উদার হলে কিন্তু আপনার বন্ধুরা বেশ বিরক্ত হতে পারে এবং আপনার সম্পর্কে তাদের মনোভাবেও পড়বে তার ছাপ। দেখে নিন এমন কিছু ব্যাপার যা করার মাধ্যমে ফেসবুকের বন্ধুদের হয়তো হরহামেশাই বিরক্ত করে চলেছেন আপনি।

১) অযাচিত অনুপ্রেরণা দেওয়া
অন্যকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য ফেসবুকে ছবি, বাণী, গল্প বা মেসেজের অভাব নেই। কোনও বন্ধুকে একটু বিষণ্ণ মনে হচ্ছে? পাঠিয়ে দিলেন এমন একটা অনুপ্রেরণা ভরা বার্তা। কাজটা করে নিজেই নিজের পিঠ চাপড়ে দিয়ে ভাবলেন বেশ ভালো একটা কাজ করে ফেলেছেন? আসলেই কি তাই? সেই বন্ধুটি হয়তো আদতে বিষণ্ণ ছিলই না। নিজের জীবন নিয়ে সুখী সেই মানুষটিকে অযথাই অনুপ্রেরণা দিতে গেলে সে মনে করতে পারে আপনি তাকে ছোট করে দেখছেন। আর সে সত্যি সত্যি বিষণ্ণ হয়ে থাকলেও আপনার এই গায়ে পড়ে অনুপ্রেরণা দেবার ব্যাপারে তার খুশি হবার চাইতে বিরক্ত হবার সম্ভাবনাই বেশি। অনুপ্রেরণা সবাই দিতে পারে। বন্ধুর সত্যিকারের উপকার করতে চাইলে শুধুই ফেসবুক নয়, বরং বাস্তব জীবনেও তার খোঁজখবর রাখুন এবং তাকে জিজ্ঞেস করুন কোনও ব্যাপারে সহায়তা করতে পারবেন কিনা।

২) আজেবাজে ফেসবুক গেম এবং অ্যাপস পাঠানো
আপনি নিজে হয়তো সময় নষ্ট করছেন ফেসবুকে মাফিয়া ওয়ারস, ফার্মভিল ইত্যাদি খেলে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে অন্যদেরও নষ্ট করার মত এত সময় আছে। বার বার এসব গেম/অ্যাপ এর নোটিফিকেশন আসতে দেখলে একটা না একটা সময় খুব কাছের বন্ধুটিরও ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যেতে পারে এবং তখন তার দ্বারা ব্লক/রিপোর্ট বা দুটোরই কবলে পড়তে হতে পারে আপনার।

আরও পড়ুন : কুকুর হঠাৎ তেড়ে আসলে কী করবেন?

৩) চেইন লেটার পাঠানো বন্ধ করুন
ফেসবুকে প্রায়শই দেখা যায় বিশাল একটা ভুতের গল্প/ধর্মীয় বয়ান এবং তার পরে লেখা, “দশ জন বন্ধুর কাছে এটা না পাঠালে অমুক ক্ষতি হবে” বা, “পাঁচ জন বন্ধুর সাথে এটা শেয়ার করলে কালকের মধ্যে অমুক ইচ্ছে পুরণ হবে।” এগুলো যে আসলে মিথ্যে এগুলো তো আমরা সবাই বুঝি।

ফেসবুক ব্যবহার করার মত বুদ্ধি যার আছে তার এতটুকু ধারণা থাকা উচিৎ যে এই চেইন লেটারগুলো ভুয়া। তার পরেও অনেকে এগুলো ফরওয়ার্ড করেন এবং বন্ধুদের বিরক্তির শিকার হন। পরিষ্কার জেনে নিন যে এই কাজটা করে আপনার কোনই লাভ হবে না বরং বন্ধু হারানোর শঙ্কা আছে। ফেসবুক থেকে এই অকেজো সংস্কৃতি দূর করতে এসব চেইন লেটার ফরওয়ার্ড করা বন্ধ করুন।

৪) একঘেয়ে এবং বিরক্তিকর স্ট্যাটাস/ ছবি
ফেইসবুকের আরেকটা কমন সমস্যা হল বিরক্তিকর স্ট্যাটাস আপডেট এবং ছবি ইত্যাদি। আপনি বিনোদনশিল্পী নন বটে, কিন্তু তাই বলে “সকালে ঘুম থেকে উঠলাম”, “কলা খেলাম”, “সূর্য পূর্বদিকে ওঠে”, এহেন বিরক্তিকর স্ট্যাটাস দেবার মানে কি? আপনার জীবনে হয়ত কলা খাওয়ার বিশাল তাৎপর্য আছে, কিন্তু আপনার বন্ধুর কাছে কি আছে? নিজের নিউজ ফিড এমন অর্থহীন পোস্ট দিয়ে ভরে থাকতে দেখলে যে কারও মস্তিষ্ক শর্ট সার্কিট হয়ে যেতে পারে। এখন আপনার কি করনীয়? স্ট্যাটাস দেবার আগে ভেবে নিন আপনার নিজের ও বন্ধুদের জন্য তার বিষয়বস্তু যথেষ্ট মজার বা দরকারি কিনা। নয়তো নিজের দৈনন্দিন জীবনের হাবিজাবি বর্ণনা দিয়ে তাদেরকে বিরক্ত করবেন না।

৫) কাউকে চ্যাটে ক্রমাগত বিরক্ত করে যাওয়া
আপনার কাছে হয়তো অনেক সময় আছে চ্যাট করে আড্ডা দেয়ার। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে যে সকলের সেই সময়টা নাও থাকতে পারে। কিংবা সবসময় আড্ডা দেয়ার মতন পরিস্থিতি থাকেও না। কাউকে চ্যাটে বা ইনবক্সে নক করলে তিনি জবাব না দেয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আর জবাব না পেলে বা দিতে দেরি হলে তাঁকে একাধিক মেসেজ, অভিমান সুলভ বাক্য বা খোটা দেয়াও বন্ধ করুন। এটা ব্যক্তিত্বহীনতার পরিচায়ক।

আরও পড়ুন : যা খেলে ধূমপানের ইচ্ছা কমে

৬) অযাচিত ট্যাগ করার অভ্যাস
অনেকেই আছেন একটা স্ট্যাটাস/নোট বা ছবি আপলোড করার পর তাতে পাইকারি হারে সবাইকে ট্যাগ করে দেন। এই কাজটি কখনোই করবেন না। যে স্ট্যাটাস/নোট বা ছবির সাথে যার সম্পর্ক নেই, তাঁকে ট্যাগ করা রীতিমতন হাস্যকর একটা ব্যাপার। ব্যাপারটা ঘাড়ে ধরে কিছু পড়তে বাধ্য করা কিংবা দেখানোর মতন। লাইক/ কমেন্টের প্রত্যাশায় অযথা ট্যাগ করে অন্যের বিরক্তির কারণ হবে না।

৭) বিরক্তিকর গায়ে পড়া ধরনের মন্তব্য
অনেককেই দেখা যায় বিভিন্ন বন্ধুদের স্ট্যাটাস বা ছবিতে অযাচিত মন্তব্য করে বেড়াচ্ছেন। কেউ নিজের কোন পেজের বিজ্ঞাপন করছেন, কেউ বা আবার লিখছেন “তুমি তো আমাকে ভুলে গেছো, আমার কথা মনে করো না, খবর নাও না” ইত্যাদি ধরনের গায়ে পড়া মন্তব্য। একটা ব্যাপার মাথায় রাখবেন, সম্পর্ক কখনো জোর করে তৈরি করা যায় না। কারো আপনার জন্য মমতা থাকলে তিনি নিজে থেকেই যোগাযোগ রাখবেন।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য