রাজ্য

৩০০ বছরেরও বেশি, পিতলের জয়দূর্গা মাতা পূজিত হয়ে আসছেন অনাড়ম্বর ভাবে

৩০০ বছরেরও বেশি, পিতলের জয়দূর্গা মাতা পূজিত হয়ে আসছেন অনাড়ম্বর ভাবে - West Bengal News 24

নদিয়া: নদিয়ার শান্তিপুর শহরের মতিগঞ্জ মোড়ে অবস্থিত জয়দুর্গা নামক পিতলের দুর্গা মূর্তিটি । এত প্রাচীন হওয়া সত্বেও একেবারেই আড়ম্বরহীন ভাবে পূজিত হয়ে আসছেন মা । শান্তিপুর শহরের প্রবীণ ব্যাক্তিবর্গ এবিষয়ে কিছুটা অবগত থাকলেও বর্তমানে নবীন প্রজন্ম একেবারেই অবগত নন এই ব্যাপারে ।

দেবীর মূর্তিটি সম্পূর্ণ পিতলের ও এক ছাঁচে ঢালাই করা এটির উচ্চতা প্রায় সাড়ে তিন ফুট থেকে চার ফুটের কাছাকাছি । এখানে মা মহিশমর্দিনি , দেবীর পুত্র কন্যারা অনুপস্থিত । যাকে এক কথায় বলা যেতে পারে তিন পুতুলের মূর্তি যেটা শান্তিপুর শহরে দুর্গাপুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

প্রাচীন জনপদ নদিয়ার শান্তিপুর শহরেই একমাত্র তিন পুতুলের মাতৃ আরাধনা করা হয় , যেটা শান্তিপুর শহরের বাইরে অন্য কোথাও প্রতক্ষ্য করা যায় না ।

শান্তিপুরের প্রাচীন ইতিহাস সূত্রে জানা যায় শান্তিপুর অ্যামেচার ক্লাব নিকটস্থ শান্তিপুর কল্ল্য বাড়ি বর্তমানে যেটা উকিল বাড়ি নামে পরিচিত , সেই বাড়ির কর্ণধার শ্যমাচরণ প্রামাণিক এই মাতৃ মূর্তিটি তত্কালীন মতি গঞ্জ মোড় নিকটস্থ গঙ্গার ঘাটে স্নান করতে গিয়ে গঙ্গা থেকে তুলে নিয়ে এসে মতি গঞ্জ মোড়ে ঠাকুর মন্দিরের বেদীতে স্থাপন করেন ।

আবার শান্তিপুর সম্পর্কিত বিষয়ে অভিজ্ঞ রজত প্রামাণিকের সূত্রে জানা যাচ্ছে এক সময় নদিয়ার বির নগরের মিত্র মুস্তৌফিবাড়ি পূজিত হতেন এই মহিষ মর্দিনি মাতা , সেখানেও মহা সমারোহে হতো পূজা পাঠ এবং শান্তিপুর শহর সহ আরো অন্যান্য অঞ্চলের অভিজাত সম্প্রদায়ের মানুষেরা সেখানে উপস্থিত থাকতেন।

আরও পড়ুন: আবাসনের তিনতলা চারতলায় তুলে দেওয়ার দায়িত্বভারও মৃৎশিল্পীদের

এছাড়াও আরো জানা যায় যে সেবা চালাতে অক্ষম দেবীর সেবায়েতগণ নৌকা করে মূর্তিটি শান্তিপুর শহরের গঙ্গায় এসে ভাসিয়ে দেন যেটা পরবর্তীকালে শ্যামাচরণ বাবু পেয়ে ছিলেন ।

প্রত্যেকদিনই মায়ের মন্দিরে পূজা করা । দুর্গাপূজা তেও একেবারেই আরম্বর হীন ভাবে পূজিত হন মা । তবে তার অপর আরেকটি কারণ হলো এই পুজোটি যাদের নেতৃত্বে পরিচালিত হয় অর্থাৎ শান্তিপুর উকিল বাড়ি তাদের বাড়িও এই মূর্তি উদ্ধারের আগে থেকেই অর্থাৎ ৩০০ বছরের অধিক সময় ধরেই দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয় , আর ঠিক কারণেই দুটি দুর্গা পুজো একসাথে পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি এমনটাই জানাচ্ছেন তাদের বাড়ির কর্মকর্তারা ।

তবে মহাষ্টমীর দিন এই অঞ্জলী দেবার উদ্দেশ্যে যথেষ্ট জনসমাগম হয় বলেই সূত্রের খবর , তবে এ বছর রয়েছে করোনা মহামারীর প্রেক্ষাপট । সে কারণেই জনসমাগম হবে না এই মন্দিরে এমনটাই সূত্রের খবর ।

মাতৃ মূর্তির সাথেই এই মন্দিরে পূজিত হন দেবাদিদেব এবং নারায়ণ শিলা । তবে প্রকৃত ঈশ্বর বাস নিরালায় , নিভৃতে , নির্জনে এবং তার পুজাও করা হয় অত্যন্ত আড়ম্বর হীন ভাবে ।

বর্তমানে শান্তিপুর শহরে মতীগঞ্জ মোড়ের দুর্গতিনাশিনী মা কি সেই বার্তাই দিয়েছিলেন আগে থেকেই ? তা না হলে কয়েক শতাব্দী ধরে মা এভাবে আড়ম্বর হীন ভাবেই বা পূজিত হবেন কেনো ?একরাশ প্রশ্ন ও বিস্ময় থেকেই যাচ্ছে ।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য