ঝাড়গ্রাম

ঝাড়গ্রামের সেনবাড়ির ঐতিহ্যের জগদ্ধাত্রী পুজোর এবার ২১৬ তম বর্ষ

স্বপ্নীল মজুমদার

ঝাড়গ্রামের সেনবাড়ির ঐতিহ্যের জগদ্ধাত্রী পুজোর এবার ২১৬ তম বর্ষ - West Bengal News 24
নিজস্ব চিত্র

ঝাড়গ্রাম: ২১৫ বছর আগের কথা। তৎকালীন পূর্ববঙ্গে কুলদেবী জগদ্ধাত্রীর যে পুজো শুরু হয়েছিল, ঠাঁইনাড়া হয়ে সেই পুজো এখন হয় ঝাড়গ্রামে। আগের মতো জাঁকজমক আর নেই। তবে এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে সেনদের পারিবারিক ঐতিহ্য।

১২১২ বঙ্গাব্দে অধুনা বাংলাদেশের ময়মনসিংহের আকুয়াপাড়ায় নিজের বাড়িতে পুজো শুরু করেছিলেন সম্পন্ন ভূস্বামী রামরতন সেনশর্মা। পারিবারিক পেশা কবিরাজি হলেও রামরতন ছিলেন ময়মনসিংহের মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্যচৌধুরীর দেওয়ান। সেই ঐতিহ্যের পুজো ঠাঁইনাড়া হয় দেশভাগের পরে।

রামরতনের উত্তরসূরিরা চলে আসেন ঝাড়গ্রামে। পূর্ববঙ্গে পুজো হতো তিন দিন ধরে। তবে ঝাড়গ্রামে সেন বাড়িতে এখন পুজোটি এক দিনেই হয়। এ বার পুজোর ২১৬ তম বর্ষ। সেন পরিবার সূত্রে জানা যায়, এক সন্ন্যাসীর পরামর্শে পারিবারিক সমৃদ্ধির কামনায় পূর্ববঙ্গে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেছিলেন রামরতন।

আরও পড়ুন: ‘প্রয়াত বিখ্যাত বাঙালি, নক্ষত্রপতন সংস্কৃতি জগতে

তাঁর ছেলে রামসুন্দরও ছিলেন ভূস্বামী। রামসুন্দরের ছেলে প্রবোধকুমার সেন ময়মনসিংহের রাজ এস্টেটের ম্যানেজার ছিলেন। দেশভাগের পর পাঁচের দশকে প্রবোধবাবু সপরিবারে চলে আসেন ঝাড়গ্রামের বাছুরডোবায়। ১৯৫৩ সালে তাঁর উদ্যোগে ঝাড়গ্রামের বাড়িতে শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পুজো।

ঝাড়গ্রামের সেনবাড়ির ঐতিহ্যের জগদ্ধাত্রী পুজোর এবার ২১৬ তম বর্ষ - West Bengal News 24
নিজস্ব চিত্র

আর্থিক সমস্যা সত্ত্বেও পারিবারিক ঐতিহ্যের পুজো ও অনুষ্ঠান বন্ধ হতে দেননি রামরতনের উত্তরসূরিরা। ১৯৮৩ সালে প্রয়াত হন প্রবোধবাবু। এখন পুজোর মুখ্য দায়িত্বে রয়েছেন প্রবোধবাবুর বড় ছেলে ৮৩ বছরের সুবোধ সেন। সুবোধবাবু একজন প্রখ্যাত বেহালা শিল্পীও।

সুবোধবাবুর ভাইপো দেবব্রত সেন বলেন, “আমরা সবাই মিলে সাধ্য মতো আয়োজনে পুজো চালিয়ে যাচ্ছি।” তিনি আরও জানান, জগদ্ধাত্রীর পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ময়মনসিংহে প্রায় ২০ হাজার টাকা বার্ষিক আয়ের দেবত্র সম্পত্তির রেখে যান রামরতন।

দেশভাগ হওয়ার পরে পূর্ববঙ্গের সেই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়। ঝাড়গ্রামে আর্থিক সমস্যা সত্ত্বেও পুজো ও বার্ষিক অনুষ্ঠানগুলি বন্ধ হয়নি। জমিদারের পুজোর সেই জৌলুস আজ ইতিহাস। তাঁরা কেবল সীমিত সাধ্যের মধ্যে ঐতিহ্যের ধারাটিকে টিকিয়ে রেখেছেন।

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য