জানা-অজানা

অদ্ভুত এক কাপ তৈরি করেই তিনি হয়ে যান কোটিপতি

অদ্ভুত এক কাপ তৈরি করেই তিনি হয়ে যান কোটিপতি - West Bengal News 24

গোঁফহীন পুরুষ মানুষ আবার পুরুষ নাকি! এমনটিই বলা হত এককালে। মানুষের পরিচয়ই হয়ে যেত গোঁফের কারণে। আজো অবশ্য ভারতের পাঞ্জাবসহ বেশ কিছু স্থানে গোঁফ রাখার প্রচলন রয়েছে বংশপরম্পরায়। তবে বিশ্বের অনেক মানুষই সখের বশে গোঁফ রাখেন।

নিশ্চয় ভাবছেন, কোটিপতি ব্যক্তির কথা জানাতে গিয়ে হঠাৎ গোঁফের কথা বলছি কেন? এই গোঁফ নিয়েই আজকের কাহিনী। মনে আছে, অমিতাভ বচ্চনের বিখ্যাত সংলাপ ‘মুছে হে তো নাখুলাল জায়সি, বরনা না হো’।

জানেন কি? অতীতে গোঁফের আবারও নানান রকমফেরও। সুকুমার রায় বলে গেছেন- গোঁফের আমি গোঁফের তুমি, তাই দিয়ে যায় চেনা। তবে যদি শোনেন যে গোঁফ বাঁচাতে আবিষ্কার হচ্ছে কাপ। যাতে চা খাওয়ার সময় গোঁফ নষ্ট না হয়। তাহলে খানিকটা অবাক হতে হয় বৈকি।

অদ্ভুত এক কাপ তৈরি করেই তিনি হয়ে যান কোটিপতি - West Bengal News 24

আরও পড়ুন : ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী যত আলোচিত ঘটনা

এমনই এক চাঞ্চল্যকর কাপ আবিষ্কার হয়েছিল ভিক্টোরিয়ান যুগে গোঁফ বাঁচাতে। যার ফলে কোটিপতি হয়ে গিয়েছিলেন আবিষ্কারক। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক ব্যতিক্রমী এই কাপ সম্পর্কে-

একটা সময় ছিল যখন পুরুষরা আজকালের তুলনায় তাদের গোঁফের প্রতি অনেক বেশি মনোযোগ দিত। দৈনন্দিন ছাঁটাই এবং বিশেষ মোমের ব্যবহার ছাড়াও ভিক্টোরিয়ান যুগে গোঁফপ্রেমীরা তাদের গোঁফ সযত্নে রাখার জন্য পেয়েছিলেন এক অদ্ভুত সামগ্রী।

মুসটাসে কাপ বা গোঁফ কাপ। এই সময়ের ভদ্রলোকেরা গর্বের সঙ্গে গোঁফ রাখতেন। শুধু গোঁফ রাখলেই তো হবে না, তার পেছনে খাটুনিও তো করতে হয়। গোঁফ হতে হবে দৃঢ় এবং শক্ত।

সঠিকভাবে সাজানো থাকবে, খুব বেশি লম্বা করা যাবে না গোঁফ, আবার খুব ছোটও হবে। গোঁফ সোজা রাখার জন্য বিশেষ ধরনের মোম ব্যবহার করা হত। ভিক্টোরিয়ান যুগের লোকজন তাদের কোটের পকেটের ভিতরে এক বিশেষ চিরুনি বহন করতেন।

এই বিশেষ দুই ইঞ্চি লম্বা ভাঁজ করা চিরুনি প্রায়ই কচ্ছপের খোল ও রূপা দিয়ে তৈরি করা হত। ওই সময় পুরুষরা অনেকেই তাদের গোঁফ রং করতেন যাতে তাদের বয়ষ্ক না দেখায়।

আরও পড়ুন : ক্রিসমাস ট্রি সাজানোর পেছনের গল্প জানেন কি?

যেহেতু ব্রিটেনে চা পান এক ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তাই সবাই দুশ্চিন্তায় পড়ে যাচ্ছিলেন। চা পান করা বা গোঁফ ত্যাগ করা, কোনোটিই সম্ভব নয়। কিছু একটা উপায় খুঁজে বের করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছিল তখন। এমন সময় তৈরি হয় মুসটাসে কাপ বা গোঁফ কাপ।

হার্ভি অ্যাডামস নামের এক ব্রিটিশ মৃৎশিল্পী ১৮৬০ সালে গোঁফ কাপ আবিষ্কার করেন। দেখতে অনেকটা চায়ের কাপের মতো হলেও এতে গোঁফের জন্য একটা গার্ড থাকতো।

বিষয়টা বাস্তবে খুব সহজ, কাপের মুখের দিকে গোঁফের জন্য আলাদা একটা গার্ড রাখা থাকত। আর তার নিচের দিকে থাকত একটা আলাদা ছিদ্র। যা দিয়ে চা পান করা যেত। তবে এতে গোঁফ ভেজার বা মোম গলে যাওয়ার ভয় থাকতো না।

আরও পড়ুন : বাংলার বধূর সিরিয়াল কিলার হয়ে ওঠার পেছনে করুণ ইতিহাস

গোঁফ কাপ অল্পদিনের মধ্যেই তাৎক্ষণিক সাফল্য পেয়েছিল। সমগ্র ব্রিটেন জুড়ে এই কাপ ব্যাপকভাবে বিক্রি হতে থাকে। তারপর এই কাপ ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এরপর থেকে বিপুল পরিমাণে গোঁফ কাপ উৎপাদন শুরু হয়। আবিষ্কারক এত ধনী হয়ে ওঠেন যে তিনি এই চাঞ্চল্যকর আবিষ্কারের ১৫ বছর পর অবসর গ্রহণ করেন।

কাপ উৎপাদকেরা ক্রমশ ম্যাচিং প্লেট আনতে থাকেন বাজারে। এমনকি কিছু কাস্টম কাপ তৈরি করা হতে থাকে যাতে কাপের উপর মালিকের নাম লেখা থাকতো। কিছুদিনের মধ্যেই ব্রিটিশ, জার্মান, আমেরিকান এবং জাপানি গোঁফ কাপ তৈরি হতে থাকে। মুসটাসে কাপ বা গোঁফ কাপ, সেই আমলের পুরুষদের জন্য এক অপরিহার্য সামগ্রীতে পরিণত হয়ে উঠেছিল।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য