বরফে হাঁটু-ডোবা রাস্তা পেরিয়ে অন্তঃসত্ত্বাকে হাসপাতালে পৌঁছে দিলেন জওয়ানরা
লাগাতার বরফ পড়ছে কয়েক দিন ধরে। বন্ধ হয়ে গেছে একাধিক রাস্তাঘাট। অবরুদ্ধ অবস্থায় ঘরবন্দি সাধারণ মানুষ। জম্মু ও কাশ্মীরের বহু এলাকাতেই এখন এমন অবস্থা শীতে। এমনই পরিস্থিতিতে আতান্তরে পড়েন মহম্মদ মীর।
কারণ উত্তর কাশ্মীরের কূপওয়ারা জেলার বাসিন্দা মীরের মেয়ে কাতরাচ্ছেন প্রসব বেদনায়। হাসপাতাল পর্যন্ত যাওয়া দূরের কথা, ঘর থেকে বেরোনোই অসম্ভব! তবে কথায় নাকি বলে, ভারতীয় সেনার কাছে কিছুই অসম্ভব নয়। তা এ গর্ব করা সাজে তাদের। কেনই বা তা হবে না।
একহাঁটু বরফ ভর্তি দীর্ঘ রাস্তা পেরিয়ে, মীরের বাড়িতে পৌঁছে, তাঁর মেয়েকে স্ট্রেচারে তুলে, বরফে ডুবে থাকা রাস্তাতেই প্রায় এক কিলোমিটার দূরের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে পৌঁছে দিলেন তো তাঁরাই! গতকাল, বুধবারের এই ঘটনায় শেষমেশ হাসপাতালে সুস্থ শিশুর জন্ম দিয়েছেন ওই মহিলা।
তিনি সদ্যোজাত সন্তান দু’জনেই ভাল আছে। স্বাভাবিক ভাবেই মহম্মদ মীর ও তাঁর পরিবারের কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে। জানা গেছে, গতকাল মেয়ে যখন ছটফট করছে ব্যথায়, অসহায় হয়ে সেনাকে ফোন করে পরিস্থিতির কথা জানান মীর।
আরও পড়ুন: রতন টাটার গাড়ির নম্বর প্লেট ব্যবহার করে প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার মহিলা
খবর পেয়েই এলাকায় টহলরত জওয়ানরা দ্রুত পৌঁছে যান তাঁর বাড়িতে। একটুও দেরি না করে, তাঁরা নিজেরাই সকলে মিলে স্ট্রেচারে তুলে পিঠে বয়ে নিয়ে যান মহিলাকে। একটি গাড়ির ব্যবস্থা করে মহিলাকে তাতে তোলেন প্রথমে। কিন্তু গাড়িটিও কিছুদূর এগিয়ে বরফে আটকে যায়।
সেখান থেকে স্বাস্থ্য কেন্দ্র আরও এক কিলোমিটার দূর। তাতে কী! স্ট্রেচার কাঁধে তুলে বরফ ভেঙে তাঁকে পৌঁছে দেন সেনারাই। গত কয়েকদিন ধরেই একটানা তুষারপাতে বিধ্বস্ত কাশ্মীর। রাস্তা পরিষ্কার করার সরঞ্জামও পৌঁছনো মুশকিল হয়ে পড়ছে। এমনটা অবশ্য এই প্রথম নয়, প্রতি বছরই হয়।
আর প্রতিবছরই নানা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বহু অসুস্থ মানুষকে সাহায্য করেছেন সেনা জওয়ানরা। বহু হবু মাকে সময়ে পৌঁছে দিয়েছেন হাসপাতালে। এবারেও তেমনটাই ঘটল। ভারতীয় সেনাকে আরও একবার কুর্নিশ করছেন নেটিজেনরা। প্রতিটি মানুষের সুরক্ষায় তাঁদের নিরলস চেষ্টা সত্যিই প্রশংসনীয়।
সুত্র: দ্য ওয়াল