ভোট পরবর্তী হিংসায় সিবিআইয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে রাজ্য সরকার
পূর্বাভাস ছিলই। সেই মতো ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, বুধবারই এই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
হাইকোর্ট যেভাবে খুন ও ধর্ষণের মামলায় সিবিআই-কে দিয়ে, ও অন্যান্য হিংসা মামলাগুলি সিটকে দিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে, তাতে মোটেও সন্তুষ্ট নয় রাজ্য সরকার। বলা ভাল, হাইকোর্টের রায়ে যেভাবে রাজ্য ধাক্কা খেয়েছে, তাতে বেজায় অসন্তুষ্ট খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে কারণে যাবতীয় জল্পনা সত্যি করেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য।
গত ১৯ অগস্ট ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট। পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাগুলির তদন্তভার তুলে দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর হাতে। অন্যদিকে, বাকি হিংসার ঘটনার তদন্তের জন্য রাজ্য পুলিশের তিন সদস্যের একটি সিট গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মতো রাজ্য়ে এসে ইতিমধ্যেই তদন্তের কাজ জোরকদমে শুরু করে দিয়েছে সিবিআই। ৩০-টির বেশি এফআইআরও রুজু করা হয়েছে।
আরো পড়ুন : রাজ্যে একদিনে আক্রান্ত ৬৭৯, কমল দৈনিক মৃত্যু
হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাজ্য যে সুপ্রিম কোর্টে যাবে, তা একপ্রকার অবশ্যম্ভাবী ছিল। তৃণমূল নেতৃত্বও তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। যদিও এতে খুব একটা লাভ হতে পারে, এমন কোনও সম্ভাবনা দেখছে না আইনজীবী মহল।
কারণ, ভোট পরবর্তী হিংসার রায় ঘোষণার সময় বেঞ্চের পাঁচ বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ভিন্ন হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু একটি বিষয়ে সকলেই সহমত হন। তা হল- খুন ও ধর্ষণের মতো অপরাধের তদন্ত যেন সিবিআই দ্বারা করা হয়। ঠিক এই জায়গাতেই সুপ্রিম কোর্টে গেলেও রাজ্য়ের আপত্তি ধোপে নাও টিকতে পারে। শীর্ষ আদালতও হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখার নির্দেশ দিতে পারে বলে মনে করছেন আইনজ্ঞরা। যদিও রাজ্য সরকারের আগাগোড়াই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল। ফলে আজকের সিদ্ধান্ত যে একেবারেই অপ্রত্যাশিত নয়, সেটা বলাই যায়।
রাজ্য সরকার যদিও প্রথম থেকে বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসার কথা অস্বীকার করে এসেছে। কিন্তু হাইকোর্ট নিজের রায়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টকেই মান্যতা দিয়েছে, সেটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে যাবতীয় খুন ধর্ষণের তদন্তভার তুলে দেওয়া হলেও গোটা বিষয়টির উপর আদালতের কড়া নজর থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
আরো পড়ুন : কুপন ছাড়া ভ্যাকসিন নয়, জেলাগুলিকে কড়া নির্দেশিকা নবান্ন-র
এর পাশাপাশি মামলার রায়ে রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য। আদালতের আরও সংযোজন ছিল, ক্ষতিপূরণ বণ্টনের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও বিতর্ক এড়াতে ক্ষতিপূরণের টাকা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দিতে হবে। বলাই বাহুল্য, সেই প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি। তার আগেই শীর্ষ আদালতে হাজির হল রাজ্য।
সূত্র: টিভি ৯