বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন একাধিক নেতা। মুকুল রায়ের মতো ভোটের পর তাদের অনেকে ফিরেও গিয়েছেন ঘাসফুল শিবিরে। এনিয়ে এবার মুখ খুললেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা।
রবিবার বোলপুরে অনুপম বলেন, তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের গুরুত্ব দেওয়া মহা ভুল হয়েছে। সুযোগ সন্ধানী তৃণমূল নেতাদের দলে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, দলের পুরনো নেতাদের গুরুত্ব না দেওয়াটা ঠিক হয়নি। তারা কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিলেন।
রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির আশাতীত ফল করতে না পারা ও ভোটের পর দলের বহু নেতার দল ছেড়ে চলে যাওয়া নিয়ে অনুপম হাজরা বলেন, আমাদের বহু ভুল ছিল। তৃণমূল থেকে যেসব নেতারা দলে এসেছিলেন তাদের নিয়ে আমরা প্রচণ্ড মাতামাতি করেছিলাম। এর মাত্রা এতটাই বেশি হয়ে গিয়েছিল যে পুরোন কর্মীরা কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিল। যারা অনেক দিন আগে থেকে দলটা করতেন তারা মনে করেছিলেন, এটা বোধ হয় নবাগতদেরই পার্টি।
আরও পড়ুন : ইস্তফা দিয়েই তৃণমূলে বড় দায়িত্ব বাবুল সুপ্রিয়র, ধন্যবাদ জানালেন দলকে
অনুপম আরও বলেন, একসময় একটা হাওয়া ছিল যে বিজেপি আসছে। সেইসময় ওইসব নেতারা এসেছিলেন। এখন ২ মে-র পর যখন দেখা গেল বিজেপি হেরে গেল তখন ওইসব নেতারা ফিরে গিয়েছে। এরকম সুযোগ সন্ধানী নেতার কোনও দলেরই হয় না। আবার যখন বিজেপির হাওয়া আসবে তখন হয়তো তারা চেষ্টা করবে বিজেপিতে আসার। আমাদের দোষ একটাই যে ওদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিছু ওই ধরনের নেতাকে নিয়ে এতটাই মাতামাতি করাটা আমাদের ভুল ছিল। এসব করে আমাদের শিক্ষা হয়েছে।
অন্যদিকে, জি ২৪ ঘণ্টাকে অনুপম হাজরা বলেন, আগেও বলেছি ভোট চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেড় থেকে দুমাসে মাসে প্রায় ২৫ বার এসেছেন। সে সময় আমাদের পার্টির স্লোগান ছিল ইসবার, ২০০ পার। সেই লক্ষ্য নিয়েই প্রধানন্ত্রী সেই স্লোগান দিয়েছিলেন। সেটা পূরণ হয়নি। একশো আসন পাইনি আমরা। কেন হল না, তার বিশ্লেষণ দরকার। আমি বারবার বলেছি তৃণমূল নেতারা বিজেপিতে আসার পর প্রবল মাতামাতি হতে শুরু করে। পুরোন কর্মীরা এনিয়ে আমাকে বলতেন। যা হয়েছে তা হয়েছে। এখন দলের উচিত ভুল যে একটা ছিল তা স্বীকার করে নেওয়া। তাহলে কর্মীদের কাছে একটা ভালো বার্তা যাবে।
আরও পড়ুন : ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়, রাজধানীতে চলছে চিকিত্সা
অনুপম হাজরার ওই মন্তব্য নিয়ে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, দল এধরনের কোনও বিবৃতি দেয়নি। প্রতি নির্বাচন থেকে রাজনৈতিক দলগুলি শিক্ষা নেয়। হারলেও নেয়, জিতলেও নেয়। আশা করেছিলাম আমরা জিতব। মানুষ আমাদের বিরোধী আসনে বসার রায় দিয়েছে। এনিয়ে দল আত্মসমীক্ষা করবেই। সেটা সংবাদ মাধ্য়মে বলা হবে, সেটা বিজেপির নীতি নয়।
অন্যদিকে, এনিয়ে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, আমরা নতুন-পুরনো দেখি না। যে ভারতীয় জনতা পার্টির ঝান্ডা ধরেছে তাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। সবাইকে সম্মান দিয়েছি। কাউকে কাউকে টিকিট গিয়েছি। কেউ যদি থাকতে না পারে তো কী করা যাবে। অনুপম হাজরার যা মনে হয়েছে তা তিনি বলেছেন।
সুত্র : ২৪ ঘন্টা