জানা-অজানা

যে দ্বীপে কুমিরের খাবার হয়েছিল হাজারো জাপানি সেনা

যে দ্বীপে কুমিরের খাবার হয়েছিল হাজারো জাপানি সেনা - West Bengal News 24

নোনা জলের বিশালাকার সব কুমিরের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত মিয়ানমারের রামরি দ্বীপ। রাখাইন রাজ্যের উপকূলে অবস্থিত দ্বীপটির আয়তন প্রায় এক হাজার ৩৫০ বর্গ কিলোমিটার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর হামলা থেকে প্রাণে বাঁচতে রামরি দ্বীপে শেষ প্রান্তে আশ্রয় নিয়েছিলেন অন্তত এক হাজার জাপানি সেনা। তারা রামরির প্রায় দশ মাইল জুড়ে বিস্তৃত ঘন ম্যানগ্রোভ বনভূমির জলাশয়ে আশ্রয় নেন। জাপানি সেনারা তখনো জানতো না তাদের জন্য কী ভয়ংকর প্রাণী অপেক্ষা করছে সেখানে।

ম্যানগ্রোভ বনটির শেষ প্রান্তের জলাশয়গুলোতে বাস করত ভয়ংকর সরীসৃপ প্রাণী কুমির। এসব কুমিরের গড় দৈর্ঘ্য ১৭ ফুট, ওজন এক টনের বেশি। এদের ক্ষিপ্ততা, গতি এবং দলবদ্ধ আক্রমণের শিকার হয় হাজারো জাপানি সেনারা। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা ছিল সেনাদের পক্ষে সম্পূর্ণ অসম্ভব।

বিশ্বের বৃহত্তম সরিসৃপের আস্তানা ওই দ্বীপে অন্তত ৯ শত সেনাকে প্রাণ দিতে হয়েছিল কুমিরের আক্রমণে। তবে মাত্র ২০ জন সেনাকে ব্রিটিশ বাহিনী সেখান থেকে উদ্ধার করতে সামর্থ্য হয়। যারা বেঁচে ফিরেছেন তারা শুনিয়েছেন কয়েক ডজন কুমিরের একত্রে আক্রমণ করার ভয়ংকর গল্প। রাতে কুমিরের আক্রমণ আর গুলির শব্দে কাটত তাদের সময়।

আরও পড়ুন :: চার স্বামীসহ ১২ জনকে খুন করেন যে সিরিয়াল কিলার

এক দিকে ছিল শত্রু সেনার আক্রমণ, অন্য দিকে দিগন্ত বিস্তৃত ঘন জঙ্গল আর কাদামাটিতে লুকিয়ে থাকা কুমির।

কয়েকশো মিটারের মধ্যে কুমিরের অতর্কিত আক্রমণে প্রাণ দিতে হয়েছিল অধিকাংশ সেনাকে।

যে দ্বীপে কুমিরের খাবার হয়েছিল হাজারো জাপানি সেনা - West Bengal News 24

তখন ১৯৪৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের তখনও ব্যাপক দাপট। তাদের পরাহত করতে মরিয়া যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যের মৈত্রী জোট। ভারতের উপকণ্ঠে মিয়ানমারের উপকূলে রামরি দ্বীপে নজর পড়েছিল ব্রিটিশদের। সেখানে একটি বিমান ঘাঁটি প্রস্তুত করার পরিকল্পনা করেছিল তারা। সেই রামরি দ্বীপে ব্রিটিশদের কাজে বাধা দিতে আসে এক দল জাপানি সেনা। শুরু হয় ভয়াবহ যুদ্ধ। পরে পিছু হটতে বাধ্য হয় জাপান। আশ্রয় নেয় দ্বীপটির পেছনের ম্যানগ্রোভ অংশে। আর এতেই তারা জড়িয়ে পড়েন ভয়ঙ্কর সেই মৃত্যুফাঁদে।

সেখানে লুকিয়ে ছিল প্রকৃতির বিভীষিকা। শয়ে শয়ে কুমিরের আস্তানা রামরির ম্যানগ্রোভ বন। বিশেষ ধরনের সেই কুমিরের নাম ‘সল্টওয়াটার ক্রোকোডাইল’ বা নোনা জলের কুমির। মিয়ানমারের নোনা জলের কুমির বিশ্বের সবচেয়ে বড় সরীসৃপ। এরা গড়ে ১৭ ফুট লম্বা। কখনও কখনও দৈর্ঘ্য হতে পারে ২২ ফুটও। ক্ষ্রিপ্ততা, আকার, গতি, শক্তি, তৎপরতা— কোনও ক্ষেত্রেই মানুষ এই কুমিরের সঙ্গে পেরে ওঠে না।

লবণাক্ত কাদামাটিতে কিছু দূর এগিয়ে বিপদের আঁচ পান সেনারা। রাতের অন্ধকারে জল থেকে মাথা তোলে হাজারো কুমির। এর পর অগণিত কুমির মানুষের গন্ধ পেয়ে হামলা চালাতে শুরু করে।

সূত্র: মিরর ইউকে

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য